ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

নিউজ জার্নাল ২৪ :: News Journal 24

নির্বাচনী বছরে টানাপোড়েনের বাজেট ঘোষণা

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০৫, ১ জুন ২০২৩

নির্বাচনী বছরে টানাপোড়েনের বাজেট ঘোষণা

নির্বাচনী বছরে এসে টানাপোড়েনের বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। একদিকে জনগণকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে থেকে সুরক্ষা দেওয়ার তাগিদ, অন্যদিকে দেশীয় অর্থনীতিতে বিদ্যমান তীব্র চাপে সম্পদের অপ্রতুলতা-এর মধ্যেই ইতিহাসের সবচেয়ে বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল।

প্রায় সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকার এই বাজেটে অর্থের যোগান হয়ে উঠবে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক খাত থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নিতে বাধ্য হলে তা একদিকে মূল্যস্ফীতিকে আরও উস্কে দেবে, অন্যদিকে বেসরকারি খাত প্রাপ্য ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। এটি উৎপাদন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে ব্যাহত করবে।

তবে অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বাজেট নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই বাজেটকে অভিহিত করেছেন- উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড়দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’র অংশ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল।

বাজেটের আকার

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মোট আকার তথা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ৮৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে প্রস্তাবি বাজেট চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেট আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটও ছিল জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। তবে সংশোধিত বাজেটে এটি কমে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে।

পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়

আগামী অর্থবছরের মোট বাজেটের ৫৭ দশমিক ২৬ শতাংশ ব্যয় হবে পরিচালন তথা রাজস্ব খাতে। আর বাকী ৪২ দশমিক ৭৩ শতাংশ যাবে উন্নয়ন খাতে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। আর এডিপিসহ মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।

রাজস্ব আয়

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের করসমূহ থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বছরের চেয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি। অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভুত কর থেকে আয় ধরা হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা।

বাজেট ঘাটতি

প্রতিবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও রাজস্ব আয়ের চেয়ে সামগ্রিক ব্যয় হবে বেশি। তাতে বাজেটে থাকবে ঘাটতি। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (বৈদেশিক অনুদান ব্যতিত)। ঘাটতির হার জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ঘাটতি (অনুদান ব্যতিত) বাড়ছে ৩৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা।

বাজেট ঘাটতি পূরণ

মূলত অভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে বাজেট ঘাটতি পূরণ করা হবে। এর মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীন উৎস হতে এবং ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণের মাধ্যমে সংস্থান করা হবে।

অভ্যন্তরীন উৎসের মধ্যে থেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি।

মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা

আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন