
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অবশেষে পরিবর্তন এসেছে একটি রাস্তায়, যা বদলে দিয়েছে পাঁচ গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা। আগে যে রাস্তায় ছিল দুটি সাঁকো, বিস্তীর্ণ এলাকায় ছিল জলাবদ্ধতা ও বিল—সেখানে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা বা কলাগাছের ভেলা। আকা-বাঁকা সরু আইল ধরে চলাচল করতে গিয়ে গ্রামবাসীকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হতো।
তবে এখন আর সেই চিত্র নেই। অবহেলিত সেই রাস্তাটি এখন পরিণত হয়েছে উঁচু মাটির রাস্তায়। বর্তমানে এ পথে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করছেন এলাকাবাসী।
এমন পরিবর্তনের গল্প চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ভুলাই মোড় সড়কের। উপজেলার বেতুয়া সড়কের ভুলাই মোড় থেকে ঠেলাখালি খাল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা বর্তমানে মাটির উঁচু রাস্তায় রূপ নিচ্ছে। দীর্ঘদিন জীর্ণ অবস্থায় থাকা রাস্তাটি ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মাণ করছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিকুল্লাহ মিয়া। তিনি জানান, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবের উদ্দেশ্যেই রাস্তাটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। তার ভাষায়— “মানবসেবার লক্ষ্য থেকেই আমি এই কাজ শুরু করেছি। মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মে; আমি চাই আমার জীবনে এমন ভালো কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে।”
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, আগে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে রাস্তাটি তলিয়ে যেতো। এখন সেই দুর্ভোগের অবসান ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. হোসেন বলেন, “আগে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ছিল খুবই কষ্টকর। রাতে কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এখন সেই সমস্যা নেই।”
আরও এক প্রবীণ বাসিন্দা মো. আবু তাহের বলেন, “এই রাস্তায় আগে ছিল দুটি সাঁকো। যাদের সামর্থ্য ছিল তারা নৌকা কিনে চলাফেরা করতো, আর গরিবরা কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করতো। এখন আমরা অনেক স্বস্তিতে চলাচল করতে পারছি।”
চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর, বদ্দারহাট, ওমরপুর, আবুগঞ্জ এবং পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ এই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করেন। শুধু চলাচলের সুবিধাই নয়, রাস্তাটি নির্মিত হওয়ায় অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অ্যাডভোকেট ছিদ্দিকুল্লাহ মিয়া আরও ৫০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন।