শেষদিকে জমা হলো কিছু রোমাঞ্চ। কিন্তু পরে সেটি হয়ে গেল তাওহীদ হৃদয়ের সেঞ্চুরি উদযাপনের। এই ব্যাটার চার-ছক্কার ফুলঝুঁড়ি ছোটালেন, ছুঁয়ে ফেললেন সেঞ্চুরিও। এরপর সেজদায় অবনত হলেন। এর মধ্যেই হারিয়ে গেলো সব রোমাঞ্চ। পুরো মিরপুরে কেঁপে উঠলো ‘হৃদয়’ ‘হৃদয়’ স্লোগানে। প্রায় পুরো ম্যাচজুড়ে চাপে থাকা কুমিল্লাা ভিক্টোরিয়ান্সই হাসলো জয়ের হাসি।
শুক্রবার বিপিএলের ম্যাচে দুর্দান্ত ঢাকাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নাঈম শেখ ও সাইফ হাসানের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১৭৫ রানের সংগ্রহ পায় ঢাকা। জবাব দিতে নেমে হৃদয়ের সেঞ্চুরিতে ১ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কুমিলা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে এদিন ২৭ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় ঢাকা। ৩ চারে ১৩ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান চতুরঙ্গ ডি সিলভা। তিন নম্বরে খেলতে এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান সাইফ হাসান। সেখান থেকে নাঈম শেখের সঙ্গে শতরান ছাড়িয়ে যাওয়া জুটি গড়েন তিনি। মোস্তাফিজুর রহমানের এক ওভারে তারা নেন ২২ রান।
নাঈম-সাইফ জুটিতে দল পায় বড় রানের ভিত্তিও। আগের সাত ইনিংসে দেড়শ ছাড়াতে পারেনি ঢাকা। এদিন তারা করে ১৭৫ রান। এর পেছনে নাঈম-সাইফের ৭৮ বলে ১১৯ রানের জুটির ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বেশি। ম্যাথু ফোর্ডের ওভারে ৪২ বলে ৫৭ রান করে ফেরেন সাইফ।
একই বোলারের ওভারে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ বলে ৬৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান নাঈম শেখও। এই ব্যাটার শট খেলার পর ব্যাট স্টাম্পে লাগিয়ে হন হিট উইকেট। শেষদিকে নেমে অ্যালেক্স রস ১১ বলে ২১ ও এসএম মেহরব ৮ বলে ১১ রান করেন।
তাড়া করতে নামা কুমিলা ভিক্টোরিয়ান্সকে শুরুতেই বড় ধাক্কা দেয় দুর্দান্ত ঢাকা। প্রথম ওভারেই লিটন দাসকে এলবিডব্লিউ করেন শরিফুল ইসলাম। ৫ বলে তিনি করেন ৮ রান। হৃদয়ের সঙ্গে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকসও। ৫ বলে তিনি করেন ৯ রান।
ইমরুল কায়েসকে শরিফুল আউট করার পর কুমিলা ২৩ রানেই হারায় তিন উইকেট। এ অবস্থায় হৃদয়ের সঙ্গে দলের হাল ধরেন ব্রুক গেস্ট। এই দুজন মিলে ৮৪ রানের জুটি গড়েন। তাদের এই জুটি ভাঙে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৪ রান করা গেস্টকে চতুরঙ্গ ডি সিলভা ফেরালে।
এই জুটি ভাঙার পর আরও একটি উইকেট হারায় কুমিলা। কিন্তু আরেক প্রান্তে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও ছুটতে থাকেন তাওহীদ হৃদয়। ৩২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি। পরে সাইফ হাসানের এক ওভারে হাঁকান তিন ছক্কা। তার ব্যাট থেকেই এলো এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরি। সবমিলিয়ে ষষ্ঠ বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে এই টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি করেন তিনি।
হৃদয় মাঠ ছাড়েন একেবারে দলকে জিতিয়ে। ৮ চার ও ৭ ছক্কার অসাধারণ এক ইনিংসে ৫৭ বলে ১০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৮ ম্যাচে এটি সপ্তম হার ঢাকার। ৭ ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে দুইয়ে উঠে এসেছে কুমিলা।