
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিন
পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) নিলুফার শিরিনের কাছে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে এবং সাত দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে একটি সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার (২৬১/২৫) আসামির জামিনের জন্য বিচারকের বাসায় ৫০ হাজার টাকা সম্বলিত একটি খাম ও মামলার নথিপত্র পাঠান পিপি রুহুল আমিন। এ ঘটনায় বিচারক নিলুফার শিরিন নিজেকে অপমানিত বোধ করে বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় জামিনের বিষয়ে একাধিকবার বিচারকের ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করে সুপারিশ করেছিলেন রুহুল আমিন। এছাড়া আলোচিত শহীদ জসিম উদ্দীনের মেয়ের ধর্ষণ মামলাতেও আসামিপক্ষের হয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারক লিখিত অভিযোগে বলেন, “এভাবে টাকা পাঠানোয় আমি গভীরভাবে অপমানিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। অফিসে গিয়ে বিষয়টি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজের সরকারি কৌঁসুলিকে জানাই। তারাও এটিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে দেখতে বলেন।”
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী সমিতি কখনো ঘুষ, দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি প্রশ্রয় দেয় না। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা জরুরি সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। একজন সরকারি কৌঁসুলির আসামিপক্ষকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পিপি রুহুল আমিন দাবি করেন, “এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। আমি দীর্ঘদিন ধরে সততার সঙ্গে আইন পেশায় কাজ করে যাচ্ছি।”
এদিকে জানা গেছে, জামায়াতপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন ২০২৫ সালে জামায়াতে ইসলামী প্যানেল থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।