উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনী, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান—সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)–এর ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (রেইজ)’ প্রকল্পের দিনব্যাপী আয়োজন। সোমবার (১০ নভেম্বর) বরিশালের বিডিএস হলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান দিনজুড়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে তরুণ উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের অংশগ্রহণে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরিকল্পনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আহসান কবীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ আমিন শরীফ। সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ–এর মহাব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও রেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার চক্রবর্তী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফ–এর ব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও উপপ্রকল্প সমন্বয়কারী গোলাম জিলানী, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফয়জুল তারেক ও জহিরুল ইসলাম, ভ্যালু চেইন ফ্যাসিলিটেটর মাসুম সরকার, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস)–এর নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন, উপপরিচালক মো. জাহিদুর রহমান, কারসা ফাউন্ডেশনের পরিচালক (কার্যক্রম) অধ্যক্ষ এ. এফ. এম. জালাল আহম্মেদ এবং বিডিএস–এর চিফ অপারেটিং অফিসার একে. এম. গোলাম ফারুকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
দিনব্যাপী আয়োজনে অংশ নেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ, মাস্টার ক্র্যাফটসম্যান (ওস্তাদ), তরুণ উদ্যোক্তা এবং পিকেএসএফ–এর সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা। উদ্যোক্তারা নিজেদের তৈরি নানা পণ্য প্রদর্শন করেন এবং রেইজ প্রকল্পের সহায়তায় জীবনে পরিবর্তনের গল্প তুলে ধরেন।
তরুণ উদ্যোক্তা তানজিলা বেগম বলেন, “আমি আগে ছোট পরিসরে কাজ করতাম। রেইজ প্রকল্পের প্রশিক্ষণ ও সহায়তায় এখন নিজের তৈরি পণ্য বাজারজাত করতে পারছি।”
অন্য উদ্যোক্তা সনিয়া বেগম বলেন, “প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যবসা পরিকল্পনা, হিসাবরক্ষণ ও বিপণন সম্পর্কে জ্ঞান পেয়েছি। এখন নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে পাচ্ছি।”
মাস্টার ক্র্যাফটসম্যান আখি রানী বলেন, “আমার অধীনে এখন আটজন শিক্ষানবিশ কাজ করছে। তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পেরে গর্ববোধ করি—ওরা সবাই এখন সফল উদ্যোক্তা।”
প্রধান অতিথি মো. আহসান কবীর বলেন, “নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারলে দেশ আরও দ্রুত অগ্রসর হবে। পিকেএসএফ দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যে ভূমিকা রাখছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।”
পিকেএসএফ–এর মহাব্যবস্থাপক ও রেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, “শুধু ক্ষুদ্রঋণ দিয়েই দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়। ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা তৈরিকে যুক্ত করলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে অনানুষ্ঠানিক খাতের তরুণ উদ্যোক্তারা এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হন।”
অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধিদল রেইজ প্রকল্পের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) অতিথিদের সম্মাননা স্মারক হিসেবে ক্রেস্ট প্রদান করে, আর কারসা ফাউন্ডেশন অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা জানায়।
দিনশেষে আয়োজিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বরিশাল ও ঢাকার বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।









