সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর, ১ জানুয়ারি ও ২ জানুয়ারি—এই তিন দিন রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। এ উপলক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, রাষ্ট্রীয় শোক চলাকালে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। পাশাপাশি দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে। জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলের পাশে দাফন করা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
মৃত্যুর সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান, নাতনি জাইমা রহমান, ছোট ছেলের স্ত্রী শারমিলী রহমান সিঁথি, ছোট ভাই শামীম এসকান্দারসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বেগম খালেদা জিয়া নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। কিডনি ও লিভারের জটিলতা, অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন, ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় তিনি আক্রান্ত ছিলেন। সর্বশেষ সময়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।









