বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে বিএনপি তৃণমূল থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে এবং সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করছে। তিনি জানান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠাই এখন দলের মূল অঙ্গীকার।
বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তারেক রহমান জানান, নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই সাত হাজারেরও বেশি দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণের কারণে অনেককে পদচ্যুত বা বহিষ্কার করা হয়েছে। তারেক রহমান বলেন, “এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না, তবে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে অপরিহার্য ছিল। কারণ শৃঙ্খলাই আমাদের শক্তি। নিজেদের সদস্যদের দায়বদ্ধ করার মাধ্যমেই প্রমাণ হয়েছে যে, বিএনপি সততা রক্ষায় আন্তরিক এবং আমরা নিজেদের একই মানদণ্ডে দাঁড় করাই, যা আমরা ক্ষমতাসীনদের কাছেও দাবি করি।”
তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপি জনগণের আস্থা পুনর্গঠনে কাজ করছে। তরুণরা রাজনীতিকে কেবল ক্ষমতার খেলা হিসেবে নয়, বরং অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি মহৎ ক্ষেত্র হিসেবে দেখতে চায়। বিএনপি সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতেই এগোচ্ছে।
তারেক রহমান জানান, সময়ের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিএনপি নিজেদের আধুনিকায়ন করেছে। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ জোরদার করা হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ৩১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা অন্তর্ভুক্তিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। নারী, তরুণ নেতা ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই। বিএনপির পরিচয় হোক সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে।”
অতীতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণকে ক্ষমতায়ন করেছিলেন। আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজ বিএনপি তাদের সেই আদর্শ ও আকাঙ্ক্ষা সামনে রেখেই নতুন যুগের পথে এগোচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “তরুণরা বাস্তব সুযোগ চায়, জনগণ স্থিতিশীলতা চায়, আর বিশ্ব বাংলাদেশকে একটি সম্মানিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। এই প্রত্যাশা পূরণে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
সবশেষে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকি এবং জনগণের সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকি। আমি যেমন আপনাদের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ উজ্জ্বল হবে। আমরা একসঙ্গে প্রমাণ করব, বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং গণআকাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব, ইনশাআল্লাহ।”
