ঢাকা,  সোমবার  ২০ অক্টোবর ২০২৫

নিউজ জার্নাল ২৪ :: News Journal 24

নাহিদের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য: জামায়াতে ইসলামী

নিউজ জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০৯, ২০ অক্টোবর ২০২৫

নাহিদের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য: জামায়াতে ইসলামী

নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন নাহিদের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সাংবাদিকদের বলেন, ‘দায়িত্বশীল জায়গা থেকে নাহিদ ইসলামের পিআর নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন ইস্যুতে এ ধরনের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য। যা কোনোভাবে সমর্থন করে না জামায়াতে ইসলামী।’

জামায়াতের আরেক কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, যে কোনো দলের ব্যাপারে অন্য দলের শিষ্টাচার বজায় রেখে মন্তব্য করা ভালো। ব্লেম গেম বা দোষারোপের রাজনীতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ পুরনো রাজনৈতিক ধারা এটাই ছিল। রাজনীতির সেই পুরনো ধারা থেকে বের হয়ে আমরা চেয়েছিলাম ব্লেম গেমের রাজনীতিকে বিদায় করতে।

আমরা চাই ইতিবাচক রাজনৈতিক ধারা তৈরি করতে। সেটাই প্রত্যাশা ছিল আমাদের।
এই জামায়াত নেতা মনে করেন, কোনো দল বা ব্যক্তি যখন সামঞ্জস্যতা কিংবা রাজনৈতিক অবস্থান হারিয়ে ফেলে যে কোনো কিছুই বলতে পারে। সেটা যে কোনো দলের কৌশল কিংবা রাজনৈতিক অবস্থান।

এনসিপিকে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা নিজেরা জাতিকে স্বপ্ন দেখানোর কথা বলে, যারা জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট ধারণ করেন এবং আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার কথা বলে সে জায়গা থেকে তাদের সবাইকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই কাজ করা উচিত।

তিনি মনে করেন- এই ধরনের বক্তব্য ছিল পুরনো রাজনৈতিক ধারা। যে কারণে এনসিপিরও উচিত ছিল দায়িত্বশীলতা ও সৌজন্যতাবোধ বজায় রেখে মন্তব্য করা।

এর আগে রবিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাহিদ বলেন, মায়াতে ইসলামীর আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর আন্দোলন ছিল কৌশলগত রাজনৈতিক প্রতারণা। এটি ঐক্যমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পিত হয়েছিল। আর এর উদ্দেশ্য ছিল গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র ও সংবিধান পুনর্গঠনের মূল প্রশ্ন থেকে জাতীয় সংলাপকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়া।

নাহিদ উল্লেখ করেন, সংস্কারের মূল দাবি ছিল একটি উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব থাকবে, যা একইসাথে সাংবিধানিক সুরক্ষা হিসেবে ধারণা করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের মৌলিক সংস্কার ঘিরে একটি আন্দোলন গড়ে তোলার এবং জাতীয় ঐক্যমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু জামায়াত এবং তার মিত্ররা এই এজেন্ডা হাইজ্যাক করে। এটিকে নিছক কারিগরি পিআর ইস্যুতে রূপান্তরিত করে এবং তাদের সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।

জামায়াতের উদ্দেশ্য ‘কখনোই সংস্কার ছিল না’ দাবি করে তিনি বলেন, জামায়াত কখনোই সংস্কার আলোচনায় অংশগ্রহণ করেনি, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের আগেও নয়, পরেও নয়। তারা কোনো মৌলিক প্রস্তাব দেয়নি, কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখায়নি, কিংবা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকার প্রকাশ করেনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ঐক্যমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রতি তাদের সমর্থন কোনো নৈতিক বিশ্বাস নয়। বরং এটি ছিল কৌশলগত অনুপ্রবেশ— সংস্কারের ছদ্মবেশে রাজনৈতিক নাশকতা। বাংলাদেশের মানুষ আজ এই প্রতারণা স্পষ্টভাবে বুঝে গেছে। তারা সত্যের প্রতি জাগ্রত হয়েছে এবং আর কখনো ভুয়া সংস্কারবাদী দ্বারা প্রতারিত হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ ও এই দেশের সার্বভৌম জনগণ আর কখনো অসৎ, সুযোগসন্ধানী ও নৈতিকভাবে দেউলিয়া শক্তির শাসন মেনে নেবে না।

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন