ঢাকা,  মঙ্গলবার  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নিউজ জার্নাল ২৪ :: News Journal 24

কারাগারে বসেই ঝাড়-ফুঁক দিচ্ছেন দরবেশ : রিজভী

নিউজ জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫

কারাগারে বসেই ঝাড়-ফুঁক দিচ্ছেন দরবেশ : রিজভী

ছবি সংগৃহীত

শেখ হাসিনার কর্মসূচি বাস্তবায়নে কারাগারে বসেই সালমান এফ রহমান ঝাড়-ফুঁক দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রমনাস্থ ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইবি) সেমিনার হলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব)।

এ সময় তিনি বলেন, তিনি মাঝেমধ্যে জেলখানা থেকে ঝাড়ফুঁক পাঠাচ্ছেন যে, এতগুলো শ্রমিক নেমে গেলেই তো হয়। আমি জানি না তাদের বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে? কীভাবে তারা সেখান থেকে এ কথাগুলো বলছে। নিশ্চয়ই তাদের নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তারা সেটির সুযোগ নিয়ে কথাবার্তা বলছে।

কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, অন্যদিকে আমাদের কারাগারে নিয়ে মাদকসেবী ও ফাঁসির আসামিদের সঙ্গে রাখা হতো। আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে গুম-খুন করা হয়েছে। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলছে ভালো। কিন্তু সংস্কারের নামে আপনারা সময়ক্ষেপণ করবেন না। এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। এমন সংস্কার নিয়ে আসুন যাতে মানুষ ন্যায়বিচার পায়। এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করতে হবে। আর যাতে কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম না হয়। তা না হলে মানুষ ভালোভাবে নেবে না।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমান বহুমুখী প্রতিষ্ঠান। স্বল্প পরিসরে তাকে নিয়ে আলোচনা করা কঠিন। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বিরাট বিস্তৃত। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। যথা সময়ে দেশের মানুষের প্রয়োজন বুঝতে পেরেছিলেন। তার গুণাবলি ছিল অপরিসীম।

এ্যাবের সভাপতি ও আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী আব্দুল হালিম মিয়া, সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), আইইবি ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহবুব আলম, এ্যাব নেতা প্রকৌশলী আবদুস সালাম, প্রকৌশলী গোলাম মাওলা, প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, প্রকৌশলী রুহুল আলম, প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন ও প্রকৌশলী শামীম রাব্বি সঞ্চয়।

মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, তৎকালীন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন দ্বিধান্বিত। সেসময় তিনি কি করবেন কি করবেন না এমন সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে দেশের মানুষ উদ্বেলিত হয়ে উঠে। কিন্তু পলাতক প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড. ওয়াজেদ তার বইয়ে লিখে গেছেন যে, জিয়াউর রহমান ও তার অবদান মুছে ফেলতে সব চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করেছিলেন পলাতক প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগের আচরণ মানুষ দেখেছে। আওয়ামী লীগের কোন্দল ও পাল্টা কোন্দলে ১৫ আগস্ট ঘটেছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান একটি রাষ্ট্র দর্শন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ঘোষণার মাধ্যমে দেশের সব শ্রেণির মানুষকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসেন। যার বিশালতা অনেক।

রিজভী আরও বলেন, কি পররাষ্ট্রনীতি, কি শিক্ষানীতি কিংবা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ক্ষেত্রে সব খাতে জিয়াউর রহমানের অবদান। তিনি যুদ্ধোত্তর একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কৃতিত্ব তো জিয়াউর রহমানের। জোর করে আয়না ঘর বানিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করে ইতিহাস লিখেছেন। কিন্তু মানুষ সেটি গ্রহণ করেনি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়াতে বাধ্য করা হতো যে, শেখ মুজিব দেবতাতুল্য! গত ১৫/১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা এটি করার চেষ্টা করেছেন। তিনি জবরদস্তি করে একটি গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করেছেন। পটুয়াখালী যেতে পর পর তিনটি সেতুর নাম তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাখা হয়েছে। দেশে কি আর কোনো খ্যাতিমান লোক নেই। এটা কি কোনো দেশ ছিল? এটি ছিল শেখ হাসিনার গোষ্ঠীতন্ত্র। 

তিনি বলেন, তিনি (হাসিনা) ভাসানীর নামে নভোথিয়েটারের নাম বদলে বাপের নামে রেখেছেন। অথচ তার পিতা ছিল ভাসানীর শিষ্য। তিনি বেঁচে থাকলেও তো এটি করতেন না? 

রিজভী বলেন, ছাত্রশিবির তাদের একটি লেখার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত করেছে। এটি কেন? মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না। আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। সেটাকে ছোট করে, কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না। আমরা সব চেতনাকে ঐক্যবদ্ধ করে সবাই শান্তিতে থাকতে চাই। 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন